শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ অপরাহ্ন
ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে ফের চাঁদাবাজি শুরু করেছে কথিত চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক চার্জার রিকশা মালিক সমিতি। কোনো নিবন্ধন না থাকলেও সমিতির কতিপয় নেতা নগরজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে টোকেনের মাধ্যমে।বিভিন্ন পত্র -পত্রিকায় ‘সিএমপিতে প্রতি মাসে সাড়ে ৩ কোটি টাকা চাঁদাবাজি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর কিছুদিনের জন্য টোকেন বাণিজ্য বন্ধ হলেও নতুন কৌশলে তা আবার চালু করেছে চক্রটি। এতে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ রিকশাচালক ও মালিকরা। চাঁদার ভাগ থানা ও ট্রাফিক পুলিশসহ স্থানীয় দুর্বৃত্ত ও বিভিন্ন পদে থাকা ব্যক্তিদের পকেটে যায় বলে অভিযোগ আছে। এ কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন পাহাড়তলী থানার ফইল্যাতলী বাজারসংলগ্ন কলেজ রোড এলাকায় দেখা যায়, দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশার বিশাল গ্যারেজ তৈরি করে ব্যবসা করছে চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক চার্জার রিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সানাউল্লাহ চৌধুরী। এসব রিকশার মধ্যে তার ৪০টি। বাকিগুলো বিভিন্ন মালিকের। গ্যারেজে একটি বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, চার্জার রিকশা মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২ জুন থেকে বিদ্যুৎ বিল ও গ্যারেজ ভাড়া বৃদ্ধির কারণে চার্জবিল ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এক মাস আগেও ব্যাটারিচালিত রিকশায় চার্জ দেওয়ার জন্য গাড়িপ্রতি দারোয়ানের খরচসহ নেওয়া হতো ১২০ টাকা। দারোয়ানের খরচ বাদ দিলে চার্জ বাবদ নেওয়া হতো ১০০ টাকা। এর মধ্যেও দ্বিগুণ বিল হাতিয়ে নিচ্ছিল গ্যারেজ মালিকরা। এক মাসের মাথায় সেই চার্জবিলই দ্বিগুণ করা হয়। মূলত কৌশলে টোকেনের টাকা আদায় করতে চার্জ বিলের মাধ্যমে অর্থ নিচ্ছে কথিত সংগঠনটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাটারিচালিত রিকশায় ১৩০ ও ২৩০ ভোল্টের ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি ব্যবহার হয়ে থাকে। এই দুধরনের ব্যাটারি চার্জ দিতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ বিল খরচ হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বাকি টাকা গ্যারেজ মালিকের লাভ। বর্ধিত চার্জ বিল গোপনে আদায় করছে কথিত সংগঠনটি। নগরীর হালিশহর, পাহাড়তলী ও বন্দর থানার একাংশ এলাকায় ছোট-বড় অন্তত অর্ধশতাধিক গ্যারেজ রয়েছে। এগুলোর মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হয় বর্ধিত চার্জবিলের টাকা। এছাড়া নগরীর ১৩ থানা এলাকায় ১০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে কথিত সংগঠনটি। একাধিক রিকশা মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র কাজ করছে। তারা কখনো উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে, কখনো থানা ও ট্রাফিক পুলিশসহ স্থানীয় মাস্তানদের ম্যানেজ করে চালাচ্ছে এসব রিকশা।
রিকশাগুলো চলাচলের জন্য খরচের টাকা আদায় করা হয় মালিকদের কাছ থেকে। আর গাড়িগুলো চালানোর স্বার্থে ওই চক্রের দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে হয় রিকশা মালিকদের। এর ব্যতিক্রম হলেই সংশ্লিষ্ট মালিকের গাড়ি রাস্তায় চলাচল করতে দেওয়া হয় না। এভাবেই চাঁদাবাজি করে আসছে চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক চার্জার রিকশা মালিক সমিতি। চাঁদাবাজির মাধ্যমে চক্রের সদস্যরা রীতিমতো আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। তবে রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন বিভিন্ন এলাকার টি আই, ও টি আই এ্যাডমিন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
নগরীর হালিশহর চৌধুরী পাড়া, ও আব্বাস পাড়া, এলাকার রিকশা মালিকরা বলেন, গত মাসে গাড়িপ্রতি ১৫০ টাকা টোকেন আদায় করত চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক চার্জার রিকশা মালিক সমিতি। কিন্তু সম্প্রতি রিকশার চার্জবিল দ্বিগুণ ফি ২০০ টাকা নির্ধারণ করে গ্যারেজ কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে চক্রটি কৌশলে গ্যারেজ মালিকদের কাছ থেকে টোকেনের টাকা আদায় করছে। একই এলাকার আরোও কয়েকজন রিকশা মালিক জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিকরা গ্যারেজ মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। গ্যারেজ মালিকরা যে ফি নির্ধারণ করে আমাদের তা মানতে হয়। অন্যথায় আমাদের রিকশা গ্যারেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক চার্জার রিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সানাউল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আগে টোকেনের টাকাসহ গাড়িপ্রতি ৩০০ টাকা নেওয়া হতো। এখন চার্জ বিল নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। তাছাড়া এসব বিষয়ে আপনাকে জানাতে আমি বাধ্য নই বলে সংযোগ কেটে দেন।’ কথিত এই চাঁদাবাজ ওয়াজি উল্লাহ ও সানাউল্লাহ গং মহামান্য হাইকোর্টের রিটে অনুমোদন পেয়েছে বলে পুরো শহর জুড়ে চাঁদাবাজি শুরু করেছে, ইজিবাইক টম টম চালকেরা, বলেন হাইকোর্টের অনুমোদন দিলে তাহলে গাড়ি তো নিয়ম অনুযায়ী চলবে তাহলে তারা চাঁদা নেয় কিসের ?? এব্যাপারে পুলিশ সুপারের সরাসরি বক্তব্য পরিবহন খাতে কেউ চাঁদাবাজি করতে পারবে না,, তাহলে প্রশাসনের নিরব ভুমিকার কারন কি ???
এই চাঁদাবাজদের গ্রুপ হয়েছে ৩/৪টা কেউ দেখান প্রশাসনের দাপট, আবার কেউ দেখান মহামান্য হাইকোর্টের রিট, মাঝে পড়ে বেকায়দায় পড়েছে সাধারণ ড্রাইভার ও মালিকেরা,, প্রশাসন ইচ্ছে করলে ২/১ ঘন্টার ভিতর পুরো শহর খালি করতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন এলাকার সচেতন নাগরিকবৃন্দরা। একের পর এক বিভিন্ন গনমাধ্যমে এব্যাপারে সংবাদ প্রচার হলেও প্রশাসন গোপের তলে মুচকি হাসছেন কোনও এক গোপন রহস্যে।