রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
রক্ষকই যখন ভক্ষক
সত্যেন্দ্রনাথ রায়ঃ- নীলফামারীঃপ্রতিনিধিঃ
দেশের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব যার কাছে সেই যদি ভক্ষক হয় তাহলে মানুষ অসহায় বোধ করে । এবং বিশ্বস্ত সহ কর্মীরা হয়ে পড়েন সমালোচিত, এমন ঘটনায় ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আটক চোরাচালানকারী আসামীর কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ৩০ টি সোনার বারের মধ্যে ১০ টি সোনার বিস্কিট আত্মসাৎ করায় নীলফামারী মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সিপাহী মেহেদী হাসান (৩২) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার তার বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম নিজে বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন। মামলা নং ০৬। পরে তাকে নীলফামারী আদালতে দেয়া হলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছে।
গ্রেফতার সিপাহী মেহেদী হাসান দিনাজপুরের শীবপুর মোল্লাপাড়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং নীলফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কর্মরত। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারী সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের কামারপুকুর বাজার এলাকায় ঢাকা থেকে আগত সাগরিকা এক্সপ্রেস নামের একটি নৈশকোচে অভিযান চালায়। এসময় তল্লাশি করে দুই যুবকের কাছ থেকে ১৫ টি সোনার বিস্কিট উদ্ধার করা হয়। আর যুবকদ্বয়কে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়।
আটক সোনা চোরাচালান কাররীরা হলো মানিকগঞ্জ জেলার সিংঙ্গাইরের সুমন আলীর ছেলে আব্দুর রহিম (২৫) ও একই এলাকার নুরুলের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ (২৬)। পরে থানায় তল্লাশিকালে মোহাম্মদ উল্লাহর কাছ থেকে আরও ৫ টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। এগুলো তাদের কোমড়ে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল। উদ্ধারকৃত সোনার ওজন ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম এবং মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
এদিকে আসামীদের রিমান্ডে নেয়া হলে গ্রেফতারকৃত চোরাচালানী মোহাম্মদ উল্লাহ জানায় তাদের কাছে ১৫ টি করে মোট ৩০ টি সোনার বিস্কিট ছিল, যা ডিএনসি উদ্ধার করেছে। অথচ জব্দ দেখানো হয়েছে প্রথমে ১৫ ও থানায় আসার পর ২০ টি। এতে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয় এবং সে অনুযায়ী তদন্ত চালালে প্রকৃত তথ্য বেড়িয়ে আসে।
তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদ উল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া ১৫ টি সোনার বিস্কিটের মধ্যে ১০ টি সরিয়ে ফেলে সিপাহি মেহেদী হাসান। পরে সেগুলো মোহাম্মদ উল্লাহর বাবা নুরুল হকের সাথে যোগাযোগ করে অর্থের বিনিময়ে ফেরত দেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মেহেদী হাসানকে গত রবিবার রাতে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, আসামীদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ৩০ টি সোনার বারের কথা বেড়িয়ে আসে, সেই ভিত্তিতে মেহেদী হাসান কে আটক করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।