বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২১ অপরাহ্ন

Notice :
সারা বাংলাদেশ ব্যাপী বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে..........চট্টগ্রাম অফিস: সৈয়দ নূর বিল্ডিং , এম এ আজিজ রোড, সিমেন্ট ক্রসিং, দক্ষিণ হালিশহর, চট্টগ্রাম।মোবাইল নাম্বারঃ ০১৯১১৫৩৩৩০৮, ০১৭১১৪৬৭৫৩৭, E-mail: gsmripon@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
চট্টগ্রাম মহানগর ইলেকট্রিক থ্রি হুইলার যানবাহন মালিক ফেডারেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সিএমপির বন্দর থানার অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ধারালো অস্ত্রসহ দুইজন গ্রেফতার মন্দিরের দানবাক্স ভেঙে চুরি, টাকা সহ ২ চোর আটক জেএমসেন হলে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির ঘটনায় দুইজন গ্রেফতার পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে সিএমপি কমিশনার। এই কিরে তোর ভালোবাসার প্রতিদান,,?? চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালে অবৈধ কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন চাঞ্চল্যকর মৎস্য ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন হত্যা মামলার পলাতক আসামি মোরশেদুর রহমান খোকা’গ্রেফতার র‍্যাব-৭ জুয়াড়ি তাহেরের রিক্সার গ্যারেজ থেকে ১৭ জুয়াড়ি আটক নৃত্যের তালে তালে গান গেয়ে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পলাতক আসামি মেহেদী হাসান সাগর

রেলের হাজার কোটি টাকার জায়গায় প্রতারণা বাণিজ্য নিস্ব হয়েছে দোকান ক্রেতারা।

 

চট্টগ্রামে কথিত সমিতির নামে একসনা লিজ নিয়ে শাহ্ আলমের ধান্দাবাজী
রেলের হাজার কোটি টাকার জায়গায় প্রতারণা বাণিজ্য নিস্ব হয়েছে দোকান ক্রেতারা

মো: কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রাম আইস ফেক্টরী রোডে রেলের হাজার কোটি টাকার জায়গায় প্রতারণা বাণিজ্য নিস্ব হয়েছে দোকান ক্রেতারা। কথিত সমিতির নামে একসনা লিজ নিয়ে শাহ্ আলমের ধান্দাবাজী। বাংলাদেশ রেলওয়ের তিন হাজার কোটিরও বেশি টাকার ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবলে রয়েছে। বৈধতার আড়ালেও চলছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য। বিগত সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে দফায় দফায় নির্দেশনা দেয়া হলেও তা কার্যকর করা হয়নি। উপরন্ত নানা কৌশলে ভূমি দখল, বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম রেলকে ঘিরে গড়ে উঠা ‘মাফিয়া চক্র’ কোটি কোটি টাকার হরিলুটও চালাচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতি নিয়ে ঢাকায় সংসদীয় কমিটির জরুরি বৈঠক বসার কথা ছিল। বৈঠকে রেলওয়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডের পাশাপাশি মাফিয়া চক্রের অপতৎপরতা নিয়েও আলোচনা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। সূত্র বলেছে, এদের অপতৎপরতা ঠেকানো না গেলে রেলওয়ের কোন উদ্যোগ কাজে আসবে না।
রেলওয়ের পদস্থ একজন কর্মকর্তা সময়ের আলোর সাথে আলাপকালে জানান, চট্টগ্রামে রেলের অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে গেছে। অভিনব পন্থায় রেলের জায়গা দখল করা হয়েছে। রেলের ভূমি দখলের কৌশলের যেন অন্ত নেই। এক বছর মেয়াদে লিজ নেয়া হয়েছে রেল থেকে। কেউ কেউ নিয়েছে কৃষি লিজ। কিন্তু এই লিজকৃত ভূমিতে মার্কেট তৈরি করে শত কোটি টাকার দোকান বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। নগরীর প্রাণকেন্দ্র আইস ফ্যাক্টরি রোডে রেলওয়ের কয়েকশ’ কোটি টাকার জায়াগা লিজ নিয়ে মার্কেট নির্মাণের তোড়জোড় চলছে। সংঘবদ্ধ একটি চক্র রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নানা পন্থায় লোপাট করছে। রেলওয়ের উক্ত শীর্ষ কর্মকর্তার ভাষায়- ‘ওরা মাফিয়া’। এদের অপতৎপরতার কাছে পুরো রেলওয়ে জিম্মি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাম্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর এলাকা নিয়ে রেলের চট্টগ্রাম বিভাগ। চট্টগ্রাম বিভাগে রেলের মোট ভূ-সম্পত্তির পরিমাণ ৭২৭১.৭৩ একর। এরমধ্যে রেলওয়ে স্টেশন, রেল লাইনসহ অপারেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয় ৪৩৯৬ একর। অবশিষ্ট ২৮৭৫.৭৩ একর ভূমি রেলের কোন কাজে ব্যবহৃত হয় না। এরমধ্যে ১৫৭৮.২৬ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৪৫৪.৬২ একর। কৃষি কাজের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৯০৮.৪৭ একর। মৎস্য খাতে দীঘি ও পুকুর হিসেবে ইজারা দেয়া হয়েছে ১৭০.৩৩ একর। নার্সারীর জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ১.৬১ একর। সিএনজি স্টেশনকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৫.৫৯ একর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৩৭.৬৪ একর। এর বাইরে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার ১৬৯.৮২ একর ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবলে রয়েছে। নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোড, কদমতলী, পাহাড়তলী, টাইগার পাস, খুলশী, আমবাগান, আকবর শাহ, ফয়’স লেকসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলওয়ের মূল্যবান জমি নিয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের অপতৎপরতা চলে আসছে বহুদিন ধরে।
রেলের জমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অফিস করেছে। অফিসের পাশে দোকানপাটও করে দেয়া হয়েছে। দখল থেকে রক্ষা পায়নি রেললাইনের আশপাশের খালি জায়গা। নগরীর খুলশী থানার সন্নিকটে রেলওয়ে কলোনী এলাকায় বিশটির মতো দোকান নির্মাণ করে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ভারতীয় সহকারি হাই কমিশনের বিপরীতে রাস্তার পাশের এসব দোকানের এক একটি দুই তিন লাখ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। রেলের জায়গা থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জায়গাও উদ্ধার হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ওই ভূমি আবারো বেহাত হয়ে যায়। আবার গরীব লোকদের উচ্ছেদ করে প্রভাবশালীদের জায়গা দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে রেলওয়ের বিরুদ্ধে। নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডের অন্তত একশ’ কোটি টাকার জায়গা এভাবে প্রভাবশালীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেলের একাধিক কর্মকর্তা। অপর একজন কর্মকর্তা স্বীকার করেন , বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে রেলের ৪১৯ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়। কিন্তু এরমধ্যে বেশ কিছু ভূমি পুনরায় দখল হয়ে গেছে। আবার উদ্ধারকৃত ভূমির একটি অংশ ইজারার নামে পুনরায় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
সূত্র বলেছে, রেলওয়ের প্রকৌশল বিধি অনুযায়ী রেলপথের দু’ধারে খালি জায়গা থাকা বাধ্যতামুলক। রেল লাইনের পাশে কমপক্ষে ১৪.৩ ফুট এবং সর্বোচ্চ ৩০ ফুট জায়গা খালি রাখতে হয়। এর থেকে কম রাখলে তা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি রেলওয়ের বিধি লঙ্গন। রেল লাইনের পাশে কোথাও এই ধরনের স্থাপনা থাকলে তা বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করার বিধান রয়েছে। অথচ নগরীতে এই ধরনের অসংখ্য স্থাপনা রয়েছে। নগরীর চট্টগ্রাম-ঢাকা, চট্টগ্রাম-দোহাজারী এবং চট্টগ্রাম- নাজিরহাট রেললাইনের দু’পাশে অসংখ্য স্থাপনা রয়েছে। রেল লাইনের পাশে বিশাল মার্কেট করে কোটি কোটি টাকার দোকান বিক্রি করা হয়েছে।
সূত্র বলেছে, সিআরবি রেল সদরদপ্তরের আশপাশে রেলওয়ের বহু কোয়ার্টার রয়েছে। এসব কোয়ার্টারের আশপাশে বহু ভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে। কোন কোন কোয়ার্টার ভাড়া দেয়া হয়েছে ফল ব্যবসায়ীদের কাছে। কোয়ার্টারের আশপাশের ভূমিও ফলের আড়তদারদের নিকট ভাড়া দেয়া হয়েছে। বিগত সংসদীয় কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন করতে এসে এসব অবৈধ স্থাপনা এবং জবর দখলের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। রেলের জিএমসহ শীর্ষ কর্মকর্তা এবং একদল সাংবাদিক এ সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন। সংসদীয় কমিটির সভাপতি এক সপ্তাহের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ বা নির্দেশনার কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2023 Channel69tv.net.bd
Design & Development BY ServerNeed.com