শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৪ অপরাহ্ন
চট্টগ্রামে করোনা সমাচার- ৩
বিষয়: ত্রাণ নয় প্রাণ বাঁচার মেশিন চাই।
মো: কামাল উদ্দিন
গত দু’সংখ্যার পর আজ লিখছি। চট্টগ্রামে ত্রাণ নয়, প্রাণ বাঁচানোর মেশিন (আইসিইউ, ভেন্টিলটর) প্রয়োজন। চট্টগ্রামের বেশীভাগ মানুষের আকুলি-বিকুলি। আমাদের চট্টগ্রামে করোনা রোগীদেরকে বাঁচানোর জন্য আইসিইউ, ভেন্টিলেটর দরকার। দিন দিন প্রতিদিন চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাচ্ছে। তার বিপরীতে রোগীর ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হাসপাতাল নেই এবং আশংকাজনক রোগীকে বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ এবং ভেন্টিলেটরও নেই। ২ কোটি মানুষের জেলায় মাত্র ১০টি আইসিইউ রয়েছে, সিট রয়েছে ৩’শত। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা সীটের তুলনায় দশগুণ বেশী ও আইসিইউ’র তুলনায় ৫০ গুন বেশী হবে। যেখানে চট্টগ্রাম ঢাকার পরে করোনা রোগী ও আক্রান্তের সংখ্যায় সর্বোচ্চ। সেখানে রয়েছে নামে মাত্র হাতে গোনা ৩টি পরীক্ষা কেন্দ্র। রোগীর চিকিৎসার হাসপাতালের সংখ্যা ১টি, আইসিইউ রয়েছে মাত্র ১০টি। যা আগেই বলেছি সবকিছু বিবেচনা করলে দেখা যায় করোনা রোগের আক্রান্ত হলে আল্লাহ রহমতে বাঁচলে বাঁচবে না হয় মরলে মরবে। ১০টি আইসিইউ দিয়ে এত বড় চট্টগ্রামকে পর্যাপ্ত পরিমাণ রোগীর প্রাণ বাঁচাতে পারবে? তা কি সম্ভব? যা ইতিমধো প্রমাণিত হয়েছে। আইসিইউ সংকটের কারণে একাধিক রোগী মৃত্যুবরণ করেছে। আরো কত যে পরিমাণ রোগী প্রাণ হারাতে হয় তা একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ জানেনা। তাই চট্টগ্রামের মানুষের প্রাণের দাবী, ত্রাণের দরকার নাই, প্রাণ বাঁচানোর মেশিন চাই! সরকারের দায়ীত্বশীলগণ কতটুকু মনে প্রাণে বিবেচনা নিয়ে দায়ীত্ব প্রালন করছে চট্টগ্রামবাসী জানেনা। সরকারী দলের এম পি মন্ত্রী এবং মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা ত্রাণ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। কিন্তু প্রাণ বাঁচানোর জন্য যে মেশিনের সংকট রয়েছে। তাঁর কোন সুরাহা করছেননা। সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য পরিচালক একভাবে চলেন, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার চলেন তাদের মতের ভিত্তিতে। অন্যদিকে মেয়র আছেন নিজের গতিতে, কোন ধরনের সমন্বয় নেই। সাধারণ নিরহ অনাহারী মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণের প্রয়োজন রয়েছে তা কিন্তু সত্য, তবে ত্রাণ না পেলে যে একেবারে মানুষ প্রাণ চলে যাবে তা কিন্তু নয়। তবে করোনার আক্রান্তে আশংকাজনক রোগী কিন্তু যথাসময় যথানিয়মে আইসিইউ’তে চিকিৎসা দরকার। তা যথাসময়ে না পেলে রোগীর মৃত্যু ঘটবে এবং ঘটছে যা সবাই অবগত আছেন। জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে আইসিইউ বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম শহরে যেসব বেসরকারী হাসপাতালে আইসিইউ রয়েছে তা করোনা রোগীর জন্য ব্যবহার করার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের চট্টগ্রামে নব প্রতিষ্ঠিত ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫০টি একেবারে নতুন রক্ষিত ৫০ টি আইসিইউ জরুরী ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া উচিৎ ছিল এবং পরিশেষে অনুমতি দিয়েছে । অন্যদিকে করোনা রোগের টেষ্ট সরকারের হাতে রাখতে হবে। অন্যদিকে একাধিক ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের প্রস্তাবিত একাধিক ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পরিচালনাসহ ১৩দফা দাবী বাস্তবায়ন করলে। চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রোগীর তুলনায় হাসপাতালে আসন সংখ্যা একেবারে কম তা আমি আগেও উল্লেখ করেছি। দিন দিন রোগী সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়াটা আশঙ্খা জনক। চট্টগ্রামবাসীর জন্য এটি দু:সংবাদ। এই সর্বনাশা করোনা রোগ থেকে বাঁচার জন্য সরকারের নির্দেশনা মানার পাশাপাশি প্রতিটি মানুষ সচেতন হতে হবে। শাররীক দূরত্ব রেখে কাজ করতে হবে মানসিক ভাবে রোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের সচেতনতায় করোনা নিরোধের একমাত্র মহা-ঔষধ।
….. চলবে।