বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ অপরাহ্ন
নীলফামারীতে অজবালার জীবিকা চলে ভিক্ষা করে বসত ঘর অন্যের জমিতে
সত্যেন্দ্রনাথ রায় – নীলফামারীঃপ্রতিনিধি ঃ-
হাতে লাঠি কাঁধে ভিক্ষের ঝুলি।বয়স ৮১ ছুঁই ছুঁই।জীবনের আশিটি বছর যথারীতি কেটে গেছে।চোখে ঠিকমত দেখতে পাননা এখন। এক সময় সংসারে মেয়ে ও স্বামী নিয়ে আনন্দে ভরপুর ছিল তার পরিবার। কালের বিবর্তনে সবই ওলট-পালট হয়ে গেছে। একাকিত্ব,হাহাকার,আর্তনাদ সবটাই গ্রাস করেছে তাকে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় পরনে পুরোনো বিবর্ণ ধুসর সাদা কাপড়ের ধুতি। বেশভুষায় বোঝাযায় কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করেন ।
মেয়ের বিয়ের কিছুদিন পরেই স্বামী হাঁপানী রোগে মারা যায়। নিজের মেয়ের জামাই মাঝে মধ্যে যে টুকু সহযোগিতা করতো বেশকিছু দিন ধরে সে মেয়ে ও জামাই দুজনেই জটিল রোগে আক্রান্ত। এখন তাও বন্ধ ।বয়সের ভারে ও বার্ধক্য জনিত কারনে কাজে ডাকেনা প্রতিবেশীরা । সরকারি সুযোগ সুবিধা বলতে জুটেছে বিধবা ভাতা। সেই টাকায় খাওয়া দাওয়া কাপর চোপর, আর ঔষধ কেনায় কুলাতে পারেন না। নিজের নেই কোন জমি জমা। অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘর তুলে করছেন বসবাস। সে ঘরেই একপাশে থাকার বিছানা আর অন্যপাশে রান্নাকরার চুলা,পাশেই ছরিয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় রান্না করার লাকড়ি।ঘরের টিনের চালা ও বেড়ায় চারদিক অসংখ্য (ছিদ্র) ফুটা সেগুলো আটকানো আছে তারেই ব্যবহৃত পুরানো ছেড়া নোংরা সাদা কাপড়ে।
সামান্য বৃষ্টিতে পানিপরে বিছানা ভিজে যায়।বেড়ার ফুটা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকে যে কারনে ঘুমাতে পারেন ঘরে। কি ঘুম কি জেগে থাকা এ ভাবে কাটে তাঁর রাত। নিজের পানি পানের নেই কোন টিউবওয়েল, না আছে পায়খানা। যুগ যুগ ধরে এ ভাবেই চলছে তার জীবন। বলছি ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়ন হংসরাজ গ্রামের মৃত ইলাম রায়ের এর (ভিক্ষা বৃত্তি করা) স্ত্রী অজবালার কথা। তিনি বলেন হামার প্রধানমন্ত্রী শেখের ব্যটি গরীব মানুষোক পাকা ঘর দিছে মোক একটা ব্যবস্থা করিদেও বাবা এমন ঠান্ডায় আমি বোধ হয় আর বাজবো না । এই শেষ বয়সে এসে খেয়ে হোক বা না খেয়ে হোক বেলা শেষে নিশ্চিত ঘরে গিয়ে ঘুমাতে পারি। জীবনের অন্তিমকালে এসে পরিবারের কোন লোক না থাকায় নিরুপায় হয়ে জীবন বাঁচাতে ভিক্ষা বৃত্তি পেশাকে বেঁচে নিয়েছি। করতে চাই নি, কিন্তু নিরুপায়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি পাকা ঘর চাই।যেন সারাদিনের ক্লান্তির শেষে নিরবিঘ্নে সে ঘরে ঘুমাতে পারি। আমার একটা আশ্রয় চাই। শুনেছি এলাকায় অনেকে পাকা ঘর পাইছে।আমাক একটি ঘর দেন বাবা এমন আকুতি বাব বার জানান।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল রানা বলেন আমার নির্বাচিত হওয়ার এক বছর মাত্র।এখন ও কোন ঘরের বরাদ্দ পাইনি। তবে বরাদ্দ পেলে এমন মানুষের অগ্রাধিকার সবার আগে থাকবে।
এ বিষয়ে কথা হলে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি বলেন ব্যক্তিকে আবেদন করতে বলেন।এবং ঘরের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।