মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৭ অপরাহ্ন
চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা এলাকায় ব্ল্যাকমেইল করে জোরপূর্বক নিয়মিত বলৎকার করায় অতিষ্ঠ হয়ে শাহাদাত হোসেন (৩২) নামে এক মুদি দোকানিকে হত্যার মামলায় একমাত্র আসামী মোঃ আদনান প্রকাশ জিসানকে (২০) নগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (৬আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
আসামী জিসান চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানা এলাকার বৈলতলী মনছুর আলী মাঝির বাড়ীর মৃত হাজী আব্দুল সবুরের ছেলে।সে হালিশহর থানা এলাকার সবুজবাগের আহম্মেদ ভিলার নিচতলায় বসবাস করতো।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৫আগস্ট) নিহত শাহাদাতের চুরি হওয়া মোবাইলসহ চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানা এলাকার তেকোটা এলাকা থেকে জিসানকে আটক করা হয় । পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনাস্থলের পাশে ঝোপের মধ্য থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হওয়া রক্তে মাখা টিপ ছুরি উদ্ধার করা হয় । হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু না থাকায় নগর গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম ) বিভাগের বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক নজরদারির মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভিকটিমের চুরি হওয়া মোবাইলসহ গ্রেপ্তার করে। ।
নিহত শাহাদাত হোসেন(৩২) নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার দক্ষিণ চর মুজিব গ্রামের মিয়ার হাট এলাকার শাহজাহানের বাড়ির মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।সে হালিশহরের শুবাগ আবাসিক এলাকার তাহের সাহেবের বাড়ির নিচ তলায় ভাড়া থাকতেন।
আরও জানা যায়, দোকান কেনার সূত্রে গত ৪/৫ মাস পূর্বে নিহত শাহাদাতের সাথে জিসানের পরিচয় হয় । একপর্যায়ে একে অপরের সাথে সু -সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এক পর্যায়ে ভিকটিম মোঃ শাহাদাত হোসেনের বাসায় নিয়মিত যাওয়া আসা করে। একদিন ভিকটিম আসামী জিসানকে শয়ন কক্ষে বলৎকারের চেষ্টা করে । জিসান রাজী না হলে ভিকটিম জিসানকে চুরির মামলা করে জেলে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে ভিকটিম মোঃ শাহাদাত হোসেন আসামী জিসানকে বলৎকার করে । ভিকটিমের বাসায় কেউ না থাকায় আসামীকে প্রায়ই বাসায় এবং দোকানের পিছনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে বলৎকার করতো । ভিকটিমের নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ক্রাইম পেট্রোল দেখে প্ররোচিত হয়ে আসামী জিসান ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে ।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আসামী জিসানকে বলৎকারের বিষয়টি ভিকটিমের নেশায় পরিনত হয় । যার কারনে ৩০ জুলাই ভিকটিম আসামীকে আবারও তার দোকানে আসতে বললে রাত ১১টা থেকে ভিকটিমের দোকানের আশে – পাশে অবস্থান করে । পরবর্তীতে মধ্যরাতে সময় দোকান বন্ধ করে আসামীকে দোকানের পেছনে বাথরুমে নিয়ে পুনরায় বলৎকারের জন্যে কেউ না দেখার জন্য ভিকটিম লাইট বন্ধ করে দেয় । ভিকটিম আসামীকে বলৎকার করতে চাইলে ছুরি দিয়ে ভিকটিমের পেটে সজোরে আঘাত করতে থাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্যে গলা চেপে ধরে বুকে সজোরে ছোরা ঢুকিয়ে দেয় ।
জানা যায়, আসামী ঘটনার ২ দিন পর তার দুলাভাই এর বাড়ী আনোয়ারা উপজেলার তেকোটা এলাকায় চলে যায় । পরবর্তীতে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা ( বন্দর ও পশ্চিম ) বিভাগের বিশেষ টিম তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীর অবস্থান শনাক্ত করে তাকে আটক করে।