বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর এলাকায় অবস্থিত ইস্টার্ন লজিস্টিকস ডিপো এলাকায় রপ্তানিমুখী কনটেইনার আটক।
১. অদ্য ২৩/১২/২০২০ খ্রীঃ ১২ঃ৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের ইস্টার্ন লজিস্টিকস ডিপোতে এনএসআই এর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমস এআইআর সেকশন দুইটি রপ্তানিমুখী কন্টেইনার শতভাগ কায়িক পরীক্ষা সম্পন্নকরণ পূর্বক আটক করেন।
উভয় কনটেইনারের রপ্তানিকারকঃ
বাংলা ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেড
টয়েনবি সার্কুলার রোড
মতিঝিল, ঢাকা
২. কন্টেইনারদ্বয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণীঃ
ক. কনটেইনার নাম্বারঃ
FCIU3259572*20
আমদানিকারকঃ
SUCESSO FELICE TRADING
MALAYSIA
সিএন্ডএফ এজেন্টঃ
আর ইসলাম এজেন্সি
জাফর মেনশন
গোসাইলডাঙ্গা, চট্টগ্রাম
ঘোষিত পণ্যঃ
FOOD STUFF
পণ্যের ঘোষিত পরিমাণঃ
১০,৮৭৬ কেজি
পণ্যের বাস্তবিক পরিমাণঃ
৫৪৩.৪০ কেজি
ঘোষিত কার্টুন সংখ্যাঃ
৫৭২ কার্টুন
বাস্তবিক কার্টুন সংখ্যাঃ
১৬৫ কার্টুন
পণ্যের ঘোষিত মূল্যঃ
৪৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ২ শত ৩০ টাকা।
অর্থাৎ উপরোক্ত কন্টেইনারে মোট ঘোষণার চেয়ে ৪০৭ কার্টুন বা ১০৩৩২.৬০ কেজি কম পণ্য শনাক্ত হয়।
খ. কনটেইনার নাম্বারঃ
INLU2103856
আমদানিকারকঃ
MODERN LOTUS GENERAL TRADING LLC, MALAYSIA
সিএন্ডএফ এজেন্টঃ
আর ইসলাম এজেন্সি
জাফর মেনশন
গোসাইলডাঙ্গা, চট্টগ্রাম
ঘোষিত পণ্যঃ
FOOD STUFF
পণ্যের ঘোষিত পরিমাণঃ
১০,৮৫০ কেজি
পণ্যের বাস্তবিক পরিমাণঃ
৫৯২ কেজি
ঘোষিত কার্টুন সংখ্যাঃ
৫৪৫ কার্টুন
বাস্তবিক কার্টুন সংখ্যাঃ
১৮৩ কার্টুন
পণ্যের ঘোষিত মূল্যঃ
৪৪ লক্ষ ৭ শত ৪৯ টাকা।
অর্থাৎ উপরোক্ত কন্টেইনারে মোট ঘোষণার চেয়ে ৩৬২ কার্টুন বা ১০২৫৭.১০ কেজি কম পণ্য শনাক্ত হয়।
উভয় কনটেইনারেই FOOD STUFF হিসেবে মুড়ি, ড্রাই কেক, প্যাকেটজাত মসলা এবং টোস্ট বিস্কুট শনাক্ত হয়।
৩. এই দুইটি কন্টেইনার দ্বারা সর্বমোট ২১,৭২৬ কেজি পণ্য রপ্তানি করার কথা থাকলেও রপ্তানিকারক সর্বমোট ১,১৩৫ কেজি পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করার চেষ্টা করেছেন। যা ঘোষিত রপ্তানির মাত্র ০.৫% এর কাছাকাছি। ধারণা করা যাচ্ছে রপ্তানিকারক পূর্বেই প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। যে টাকা বর্তমানে স্বল্প মূল্যের পণ্য বিদেশে রপ্তানী করার মাধ্যমে সাদা টাকায় রুপান্তর করার দ্বারা দেশে ফেরত আনতে সচেষ্ট।
৪. সিএন্ডএফ এজেন্ট আর ইসলামের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কন্টেইনার দুটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করার কথা থাকলেও সিএন্ডএফ এজেন্ট এই মর্মে কোন রকম সহায়তা করেনি। বরং তাকে মুঠোফোনের মাধ্যমে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও একপর্যায়ে সে তার মুঠোফোনটি সুইচ অফ করে রাখে যা এই জালিয়াতিতে সিএন্ডএফ এজেন্ট এর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের অকাট্য প্রমাণ স্বরূপ।
এ কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উক্ত সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স অনতিবিলম্বে বাতিল করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
৫. উল্লেখ থাকে যে কনটেইনার রপ্তানির প্রায় শতভাগ হ্যান্ডেল করে থাকে বেসরকারি ডিপোসমূহ। যখন এই ডিপোগুলোতে কোন কন্টেইনার পণ্য বোঝাই হয় তখন ডিপো কর্তৃপক্ষ পণ্যের পরিমাণ ও কার্টুন সংখ্যা সুচারুরূপে বুঝে নেয়। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে ডিপো কর্তৃপক্ষ এই দুইটি কন্টেইনার হতে ১১১৭ কার্টুন পণ্য বুঝে নেয়ার কথা থাকলেও সেখানে শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৩৪৮ কার্টুন যা এই জালিয়াতিতে ডিপো কর্তৃপক্ষেরও যোগসাজশের দিকেই নির্দেশ করে।
৬. কনটেইনার দুইটি গত ২১/১২/২০২০ খ্রীঃ পূর্বোল্লিখিত খাদ্যদ্রব্য দ্বারা লোড করা হয় এবং সেগুলো আজ ২৩/১২/২০২০ খ্রীঃ জাহাজে বোঝাই পূর্বক আমদানিকারকের দেশে রপ্তানির কথা ছিল।
আলোচিত জালিয়াতিটির ধরন বিশ্লেষণে বোধগম্য যে এখানে কোন বড় স্বার্থান্বেষী মহল যুক্ত রয়েছে।
রপ্তানিকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন এবং তা এখন ভুয়া রপ্তানির মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা করছেন।
ইস্টার্ন লজিস্টিকস ডিপো কর্তৃপক্ষের কর্মপদ্ধতি বিবেচনায় নিলে বোঝা যায় যে এই জালিয়াতিতে ডিপো কর্তৃপক্ষও কোন না কোনভাবে জড়িত।
অনতিবিলম্বে রপ্তানিকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল করার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
বেসরকারি ডিপো সমূহ রপ্তানিমুখী কন্টেইনার হ্যান্ডেল করার পাশাপাশি বর্তমানে আমদানিকৃত কন্টেইনার হ্যান্ডেলেও আগ্রহী ও কর্মতৎপর। তাদের এই আগ্রহ ও কর্মতৎপরতার পিছনে যৌক্তিক কারণসমূহ খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
অন্যান্য প্রাইভেট ডিপোসমূহতেও এ ধরনের জালিয়াতি চলমান আছে কিনা তার সম্যক উপায়ে খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
এই রপ্তানিকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট এর পূর্বের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এ কোন অসাধুতা বিদ্যমান কিনা তা শনাক্তকরণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।