শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন
ঝিকরগাছায় গর্ভবর্তী স্ত্রী হাসপাতালে নিলে বল্লার কামড়ে স্বামীর মৃত্যু
মিজানুর রহমান যশোর জেলা প্রতিনিধি :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গর্ভবর্তী স্ত্রীকে নিয়ে এসে বল্লার কামড়ে আকাশ (২৭) নামের এক স্বামী মৃত্যু হয়েছে। সে সদর ইউনিয়নের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের জাকির হোসেনের বড় ছেলে। এ ঘটনায় উক্ত এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত ছোট ভাই রাহুলের মাধ্যমে জানা যায়, তার বড় ভাই পেশায় একজন ভ্যানচালক। আকাশের সন্তান সম্ভবা স্ত্রী পিংকি খাতুন (২০) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় রবিবার (১২ মার্চ) তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিন রাতে হাসপাতালে আকাশ তার স্ত্রীর পাশে ছিলো। প্রথমে তার স্ত্রীকে একটি বল্লায় কামড় দেয়। পরে সে বল্লার খোজ নিতে গেলে পরবর্তীতে তাকে ৩টি বল্লায় কামড় দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সে ব্যথা অনুভব করে ছটফট করতে থাকে। এই দৃশ্য দেখে হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স জরুরি বিভাগের ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসে। ডাক্তার তার শরীরে দুটো ইনজেকশন দেন। এরপরই মুখ দিয়ে গ্যাজা বের হয়ে আকাশের দেহ নিথর হয়ে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে তার ভাবীর ফোন পেয়ে সে আর তার মা দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দ্যাখেন তার ভাই নিথর হয়ে পড়ে আছে। মারা গেছে নাকি বেচে আছে এর উত্তর না দিয়ে ডাক্তাররা তার ভাইকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। এই অবস্থায় যশোর সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
লাশের দাফনে অংশ নেওয়া শিমুল হোসেন বলেন, আকাশের কপালে এবং বাহুতে ছোট তিনটা কালো দাগ ছিলো। মাত্র ৩টা বল্লা/মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু হয়েছে এটা কেউ বিশ্বাস করতে চাইছে না। স্বজনদের ধারণা অন্য কোনো কারণে বা ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে আকাশের মৃত্যু হতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রশিদুল আলম বলেন, বল্লা/মৌমাছির কামড়ের ফলে ঐ রোগীর প্রেশার অনেক কমে যায়, শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়, মুখ দিয়ে ফ্যানা বের হতে থাকে। মেডিকেলের ভাষায় একে Anaphylaxis shock বলে। এর একমাত্র ঔষধ হলো Hydrocortison ইনজেকশন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ঐ ইনজেকশন প্রদান করেন কিন্তু রোগীর কোন উন্নতি না হওয়ায় তাকে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে রোগীটি উক্ত হাসপাতালে মারা যান।